বিডি প্রতিবেদক :
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর নিজস্ব শিক্ষা ও সংস্কৃতি হারাতে বসেছে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি। রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারকে গুরুত্ব দিতে রিসোর্স সেন্টার নির্মান করছে ফ্রেন্ডশিপ। কক্সবাজার উখিয়া উপজেলা অধীন রোহিঙ্গা শরণার্থী ৯ নম্বর ক্যাম্প এলাকায় নির্মান করা হচ্ছে এই সেন্টার।
৪ জুলাই সোমবার সকাল ১১টায় রিসোর্স সেন্টার নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাজকীয় থাই দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মি. মাকাওয়াদি সুমিতমর। বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ শামসুদ্দোজা এবং ইউনিসেফ এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
নির্মিতব্য রিসোর্স সেন্টার সম্পর্কে ফ্রেন্ডশিপ এর শিক্ষা বিভাগ প্রধান ব্রিঃ জেঃ ইলিয়াস ইফতেখার রসুল জানান, বর্তমানে ৩৯৬ ফ্রেন্ডশিপ লার্ণিং সেন্টার থেকে নিজেদের বার্মিজ ভাষা এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিচ্ছে ২৮, ১৪৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু। এসব রোহিঙ্গা শিশুদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে ৭১৭ প্রশিক্ষক। তাদের মাঝে অর্ধেকই নারী এবং অর্ধেক রোহিঙ্গা। বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির বদলে, রোহিঙ্গাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং মিয়ানমারের বার্মিজ ভাষা শিক্ষা দেয়া হয় ফ্রেন্ডশিপ লার্ণিং সেন্টারগুলোতে। এজন্য লার্ণিং সেন্টারে কর্মরত প্রশিক্ষকদের দক্ষতা-যোগ্যতা বাড়াতে নির্মান করা
হচ্ছে এ রিসোর্স সেন্টার। ইতোমধ্যে মাসে একটি রিফ্রেশার ট্রেনিং, ফাউন্ডেশন ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষকদের। আর তিন মাস অন্তর দেয়া হয় যৌন নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধ এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ট্রেনিং। ফ্রেন্ডশিপ রিসোর্স সেন্টারটি চালু হলে, উপযুক্ত পরিবেশে প্রশিক্ষদের বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ দেয়া সহজ হবে বলে আশা করেন সংস্থাটির শিক্ষা বিভাগ প্রধান ব্রিঃ জেঃ ইলিয়াস ইফতেখার রসুল।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসার নেয়ার পর স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবন-জীবিকায় প্রভাব ফেলে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা। বিশেষ করে স্থানীয় সামাজিত পরিবেশে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় রোহিঙ্গাদের অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও নৈতিক জ্ঞানের অভাব। ফ্রেন্ডশিপ লার্ণিং সেন্টারের
মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দেয়ায় অনেকটা অনুকূলে স্থানীয় সামাজিক পরিবেশ। যা পরোক্ষভাবে শরণার্থী এলাকায় আইন-শৃংখলা রক্ষা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহযোগিতা করছে।