বিড়ি প্রতিবেদক :
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে তারেক রহমান বিদেশে চিকিৎসা করানোর কথা বলে নিয়ে গিয়ে বিষ দিয়ে মেরে নতুন রাজনীতির ছক আঁকতে চেয়েছিল। বিষয়টি আঁচ করতে পারে মানবতার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে কারাগারে না রেখে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এর চেয়ে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত আর কি হতে পারে।
রবিবার (১৪ আগষ্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের শহীদ দৌলত ময়দানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা আঃলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্য আরও বলেন, খন্দকার মোস্তাকের বংশধররা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। দলের ভিতরেও খন্দকার মোশতাক লুকিয়ে থাকতে পারে। অতি উৎসাহী সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগারের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। এরা মোশকাতের মতো দলের ক্ষতি করতে চায়। রাজনীতিকে জনগণ ও কর্মীবান্ধব করতে হবে, ‘নেতাবান্ধব’ রাজনীতি হলে খন্দকার মোশতাকরা জন্ম নেবেই।
তিনি আরো বলেন, সেদিন ৩২ নম্বরে জনকের লাশ পড়ে আছে, কোনো প্রতিরোধ প্রতিবাদ হয়নি। এতো বড় একটি ঘটনা বাঙালি জাতি কী করে নিশ্চুপ থাকতে পারলো? জনক কন্যা শেখ হাসিনা সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন।
নওফেল বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তি এনে দিয়েছিলেন যিনি, তাকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি। দায় আমাদেরই নিতে হবে। যে প্রশ্ন জাতির জনককন্যা শেখ হাসিনার মনে ‘মাঝে মাঝে উঁকি’ দেয়, তা অমূলক নয়। শেখ হাসিনার বক্তব্যে থেকে আমরা জানতে পারি, বেগম খালেদা জিয়া (তৎকালীন পুতুল) বেগম মুজিবের সঙ্গে দেখা করে এসে পাকের ঘরে এটা-ওটা করতো। জিয়া তাকে বাহক হিসেবে ব্যবহার করতেন। মেজর ডালিম, কর্নেল রশিদ ও খন্দকার মোস্তাকরা ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জাতির জনক তার সন্তানদের নাকি বলতেন, কোনো বিপদে পড়লে মোশতাক চাচার স্মরণাপন্ন হতে। অতিরিক্ত বিশ্বাস জীবনের কাল হবে, কে জানতো।
তিনি বলেন, বিএনপি নীতিনির্ধারকরাও চাইনা বিএনপি ক্ষমতায় আসুক। তাদের অনেক নেতারা আমাদেরকে তাদের রাজনীতি সম্পর্কে বলেন
বিএনপির অপরাজনীতির কারণে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে উপমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র সবার সম্মিলিত প্রয়াসের ফল। কিন্তু গণতন্ত্রকে নসাৎ করে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপরাজনীতি শুরু করেছে। এদেশের মানুষ বিভীষিকাময় দিন দেখেছে। জামাতিদের নিয়ে সেদিন জ্বালাও পোড়াও করে হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি পুড়ে দিয়েছে। জীবিত পশুদের আগুন দিয়ে মেরেছে। জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। দেশকে আফগানিস্তান বানানোর পায়তারা করেছে। তাদের এ-ই অপরাজনীতির ফল এখন তাদেরকে ভোগ করতে হচ্ছে। এজন্য খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের তওবা করে ক্ষমা চাইতে বলেন।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির জন্য কলঙ্কময় একটি দিন। আর সেই দিনে খালেদা জিয়া জন্মদিনের কেক কাটে। বাঙ্গালীজাতির জন্য এর চেয়ে লজ্জা আর কিছু হতে পারেনা।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে নওফেল বলেন, জ্বালাও পুড়াও মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে এসে হুমকি দিচ্ছে। আপনারা চিহ্নিত করুন। না হয় তারা যেকোনো মুহুর্তে দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
নওফেল আরো বলেন,ধর্মকে পুঁজি করে যারা রাজনীতি করতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। এ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি মসজিদ, মাদ্রাসা সরকারি হয়েছে।
জেলা আঃলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক সাবেক সাংসদ এথিন রাখাইন, সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপি, পৌর আঃলীগের সভাপতি মোঃ নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর প্রমূখ।