মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া..
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকার বদরখালীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত তিনঘণ্টার অভিযানে সরকারি জায়গা দখলে নিয়ে সদ্য নির্মিত ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৫০টি অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.রাহাত উজ জামান অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা থেকে এসব অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে।
একইসঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাশের সাগর চ্যানেল থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন পুর্বক দোকানঘর গুলো ভরাটের কাজে ব্যবহৃত সেলো মেশিন গুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
বদরখালী ফেরিঘাট এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযানকালে ওইসময় দখলে জড়িতরা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। ফলে অভিযানকালে কাউকে আটক করা যায়নি। অভিযানে পুর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) মোহাম্মদ আবুল মনসুর, থানা পুলিশের একটি টিম সাথে ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় জনপদে অবস্থিত এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সববায়ী প্রতিষ্ঠান বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ২৪ সেপ্টেস্বর। উক্ত নির্বাচনকে ঘিরে সমিতির বর্তমান কমিটি ও নেতৃত্ব স্থানীয় লোকজন প্রার্থী হয়েছেন।
এ কারণে ভোটের মাঠ নষ্ট হবে এই আশঙ্কায় সবাই নিশ্চুপ রয়েছেন। এ সুযোগে বদরখালী ফেরিঘাট এলাকায় সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা, কর্মচারী, নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের অনেক আত্মীয় স্বজন এবং জনপ্রতিনিধি মিলে মিশে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জলাভূমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে মেতে উঠে।
এদিকে বদরখালীতে সরকারি জায়গা দখলে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে শনিবার সকালে ইউএনও নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চালায় প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত উজ জামান।
এসময় প্রশাসন অবৈধ নির্মিত অর্ধশত দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে অবৈধ দখলে রাখা কোটি টাকা মূল্যের ৪ একর সরকারি জলাভূমি দখলদারদের হাত থেকে দখলমুক্ত করে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট রাহাত উজ জামানের উপস্থিতিতে সেখানে প্রশাসনের সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু পাঁচঘন্টার ব্যবধানে একইদিন বিকালে জেলা প্রশাসনের ওই সাইনবোর্ডটি তুলে নিয়ে গেছেন দখলবাজ চক্ররা।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.রাহাত উজ জামান বলেন, বদরখালী ফেরিঘাট এলাকায় জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা দখলে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে গতকাল সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) বলেন, অভিযানে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৫০ টি অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ ও সাগর চ্যানেল থেকে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি সেলো মেশিন গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অভিযানশেষে অবৈধ দখলমুক্ত করা জায়গায় প্রশাসনের সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও দখলবাজরা তৎপর হলে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।