বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক উপকূলের ট্রলার থেকে ১০ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ আরেকজনকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করা হলো।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম পিপিএম জানান, মহেশখালী থানার একদল পুলিশ, গত ৩০ এপ্রিল মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন (৩৮) নামের এক জেলেকে আটক করে।
আটক ব্যক্তি মহেশখালী উপজেলার, মাতারবাড়ি ইউনিয়নের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের সাইরার ডেল গ্রামের এস্তেফাজুল হকের পুত্র।
মহেশখালী থানা পুলিশ সাইরার ডেইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করার পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা আছে মর্মে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ তিনি ঐ ঘটনার সাথে জড়িত বলে পুলিশকে জানিয়েছে বলে সদর মডেল থানার ওসি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালে তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক উপকূলে ডুবন্ত একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। ২৫ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহারনামীয় ৪ জন মহেশখালীর মাতারবাড়ীর বাইট্যা কামাল, করিম সিকদার, আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মাঝি এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে মামলা করেন ডুবন্ত ট্রলারের মালিক ও মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত সামশুল আলমের স্ত্রী রোকিয়া আকতার।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিদের ৪টি ট্রলারের ৫০ থেকে ৬০ জন লোক মিলে সামশুলের ট্রলারটি জিম্মি করে পরবর্তী সময়ে সামশুলসহ অন্যদের গলায় রশি পেঁচিয়ে, হাত–পা রশি ও জাল দিয়ে বেঁধে মারধর করে মাছ রাখার হিমাগারে ভেতর আটকে রাখেন এবং ওপর থেকে ঢাকনায় পেরেক মেরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ট্রলারের তলা ফুটো করে দেন। এতে সেটি ডুবে যায়। সামশুলের সঙ্গে এজাহারনামীয় চার আসামির পূর্বশত্রুতা ছিল।
মামলা করার দিনই মাতারবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বাইট্যা কামাল ও করিম সিকদারকে। বাইট্যা কামাল মামলার ১ নম্বর এবং করিম সিকদার ৪ নম্বর আসামি। বাইট্যা কামাল ও করিম সিকদার পুলিশের কাছে পাঁচ দিনের রিমান্ডে ছিল। রিমান্ড শেষে কামাল হোসেন উরফে বাইট্টা কামাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলেও করিম সিকদার জবানবন্দি দিতে রাজি হননি।
মামলার গ্রেপ্তার অপর আসামি গিয়াস উদ্দিন মুনিরকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে বদরখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জন কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন আসামি কামাল হোসেন উরফে বাইট্টা কামাল,ফজল ও তৈয়ূব কে রিমান্ড শেষ হলে আদালতে হাজির করা হয়। তারা তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কী বলেছেন, তিনি জানেন না। অন্য দুই আসামি জবানবন্দী দেননি।
ওসি আরও বলেন, এ মামলার এজাহারনামীয় অপর দুই আসামি আনোয়ার কামাল ও বাবুল মাঝির বাড়ি মহেশখালীতে। ঘটনার পর থেকে দুজন আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনায় দেলোয়ার নামের আরেক জনকে গ্রেফতার করার পর এ মামলার সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হলো।