বিডি প্রতিবেদক :
ঝড় বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া ৬ নাম্বার বিপদ সংকেত উপেক্ষা করে ভক্ত পূজারী দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিসর্জন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দুই শতাধিক প্রতিমা নিরঞ্জন দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে পুরো সৈকত ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছিল বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজা শেষে ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার ছিল বিসর্জন। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বৃহৎ বিসর্জন টি দীর্ঘদিন থেকে হয়ে আসছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। এ বছর বৈরী আবহাওয়া ঝড় বৃষ্টি সতর্কসংকে উপেক্ষা করে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে জোরু হতে থাকে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এই বড় বিসর্জন দেখতে বিভিন্ন ধর্মের লোকজন ছাড়াও হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় জমে সমুদ্র সৈকতে। খুলনার ডুমুরিয়া থেকে আসা পর্যটক বাবু মণ্ডল বলেন, পুরো পরিবার নিয়ে দুইদিন আগে কক্সবাজার এসেছি বিসর্জন দেখার জন্য।
আবু ও আজি রাখাইন বলেন, এটা আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান না হলেও লাখ ও মানুষের উপস্থিতি আর ভক্তদের শেষ মুহূর্তের প্রার্থনা দেখতে আমরা সৈকতে হাজির হয়েছি।
দীপক শর্মা দীপু বলেন, মাকে শেষ বিদায় জানাতে এ বিসর্জনে হাজির হয়েছি। মা চলে যাচ্ছে খুব খারাপ লাগছে। আশা করি ধরণীর জন্য মঙ্গল রেখেই মা চলে যাবেন।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে লাবনী পয়েন্টের বিজয় মঞ্চের অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়। সাড়ে তিনটা থেকে প্রতিমা গুলো আসতে শুরু করে।
লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত বিসর্জনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জল করের সভাপতি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ সদস্য আশেক উল্লা রফিক, মহিলা সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমেদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহীন ইমরান, টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম,কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।
আলোচনা সভা শেষে মঞ্চ থেকে পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করার সাথে সাথে একে একে প্রতিমা নিরঞ্জন শুরু হয় সাগরে। এ সময় সমুদ্র সৈকতে উপস্থিত ভক্ত পূজারী ও দেশী বিদেশী পর্যটকরা এই দৃশ্য অবলোকন করেন।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল কর বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মাঝেও লাখো মানুষের উপস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিসর্জন অনুষ্ঠান কক্সবাজারে হয়ে গেল। এখানে প্রায় ২০০ প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মাঝেও এ বিসর্জন অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, দুর্যোগের মাঝেও এ বড় বিসর্জন টি আমরা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। এজন্য অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।