স্টাফ রিপোর্টার :
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মিয়াজি পাড়া এলাকায় গভীররাতে হামিদ হাসান টিপু নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ব্যাপক তান্ডব ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এসময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়েছে। এমনকি ব্যবসায়ীর গৃহবধূ ও তাঁর আড়াই বছরের শিশুকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। রবিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, মিয়াজি পাড়ার মৃত আবু তাহেরের পুত্র হামিদ হাসান টিপু ও তাঁর বড় ভাই ফোরকানুল হক এর মধ্যে খরিদা জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। খরিদা সম্পত্তি নিয়ে হকসহি মামলা করেন মগনামা লঞ্চঘাটের ব্যবসায়ী হামিদ হাসান টিপু। আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে টিপুর বড় ভাই ফোরকানুল হক হকসহি মামলার বিবাদী স্থানীয় মুফিজুর রহমান এর কাছ থেকে ওই জমি কবলা নিয়ে নেয়। এনিয়ে দুভাইয়ের মধ্যে দ্বন্ধ প্রকট আকার ধারণ করে।
স্থানীয়রা জানান, হামিদ হাসান টিপু মগনামা লঞ্চঘাটে কুলিং কর্ণারের ব্যবসা করেন। তাঁর বড় ভাই ফোরকান চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন। গত দুদিন আগে বিরোধীয় জায়গায় নির্মিত ফোরকানুল হকের বাউন্ডারি পাকা দেয়ালের কিছু লোহার রড চুরি হয়। ফোরকানের সন্দেহ হয় রড চুরির সঙ্গে টিপু জড়িত রয়েছে। টিপু নেপত্যে থেকে এসব কর্মকান্ড চালাচ্ছেন। ঘটনার দিন গভীররাতে ফোরকান, তার ভাই কায়সারসহ ৫-৬ জনের উত্তেজিত লোকজন টিপুর বাড়িতে হানা দেয়। এসময় বাড়িতে তাঁরা তান্ডব চালায়। টিপুর স্ত্রী ও শিশু বাচ্চাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁরা একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
এ ব্যাপারে হামিদ হাসান টিপু বলেন, লঞ্চঘাটে আমার ব্যবসা আছে। রাত দুইটার দিকে বড় ভাই ফোরকান ও কায়সারসহ ৫-৬ জনের লোকজন বাড়িতে এসে লুটপাট চালায়। তখন বাড়িতে আমি ছিলাম না। স্ত্রী ও ছোট বাচ্চাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। তাঁরা প্রথমে প্রতিবেশী মানিক ও মিয়াজি পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে
ভোর ৫টার দিকে সিরাজ বউ- বাচ্চাকে ইউপি সদস্য আমির উদ্দিনের বাড়িতে নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, বাড়িতে হানা দেওয়ার আগে বাড়ির সামনে সড়কে ধারালো কিরিচ নিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে হাকাবকা করে কায়সার। আমার স্ত্রী আমাকে ফোন করে বলে বাড়িতে না যেতে। কায়সার ধারালো কিরিচ নিয়ে বাড়ির সামনে রাস্তায় হাকাবকা করছে। আমাকে খুন করবে। এ ভয়ে আমি বাড়িতে যাইনি। দোকানে সেহেরি খেয়ে সকালে মেম্বারের বাড়িতে গিয়েছি। তারা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়।
হামিদ হাসান টিপুর স্ত্রী জোৎস্না আক্তার মুন্নী বলেন, ছোট বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। স্বামী লঞ্চঘাটে ছিল। চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি ভাসুর ফোরকান রাস্তায় কিরিচ নিয়ে হাকাবকা করছে। কিছুক্ষণ পরে ফোরকান, কায়সারসহ আরো কয়েকজন বাড়িতে ঢুকে লুটপাট শুরু করে। টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে গেছে। আমি ও আমার ছোট বাচ্চাকে টানাহেঁচড়া করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কায়সার বলেন, এটা আমার পৈত্রিক ভিটা। আমরা যেকোন সময় আসতে পারি। লুটপাট ও তান্ডবের কথা সত্য নয়।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আমির উদ্দিন বলেন, আমি বিকেলে গ্রাম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তাঁদের আগামীকাল ডাকছি। আমি একালার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে বসার কথা রয়েছে।