
আবু মিহরান :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, মাহে রামাদান মহান আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠ উপহার। রমাদানে মহান আল্লাহ কুরআন নাজিল করেছেন আবার বিজয় ও দিয়েছিলেন। দুনিয়ার জীবনে কোন না কোন ক্ষেত্রে কুরআন প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে নিয়োজিত না করলে পরকালে অবশ্যই জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। তাই কুরআন পড়ে-বুঝে কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসা সকলের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকাল পার করছে। আমাদের মধ্যে চিন্তার ঐক্য নেই। কেউ বলছি ক্ষমতা আগে। আর কেউ সংস্কার আগে। আমাদের মধ্যে দেশ নিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান প্রয়োজন। তিনি বলেন, আগ্নেয়গিরির মতো জেগে ওঠা নতুন প্রজন্মের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে স্মরণে রাখতে হবে। দেশ ও জাতির স্বার্থকে সকল কিছুর উর্ধ্বে রেখে নতুন প্রজন্মের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা পালন করতে হবে।
১৩ মার্চ শহরের একটি তারকামানের রেস্টুরেন্টে কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, বিএনপি কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজল, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম অঞ্চল টীম সদস্য মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, নেজাম ইসলাম পার্টি জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল খালেক নিজামী।
প্রধান অতিথি মুহাম্মদ শাহজাহান আরো বলেছেন, নির্বাচনের পরে সংস্কার চিন্তা করলে নতুন প্রজন্ম যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ গড়েছিল সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন নাও হতে পারে। শাসন কাঠামোতে মৌলিক কিছু পরিবর্তন অপরিহার্য।
মানুষের চাহিদা মতো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তাহলে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা সম্ভব।
দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়তে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
আগামী নির্বাচনে শতভাগ গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে বড় দলকে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ফেসবুকে যৎ সামান্য কাদা ছোড়াছড়ি; লেখালেখি হচ্ছে, সেটা সমাধানযোগ্য। মৌলিক বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ। স্বৈরাচারকে কোনভাবে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
জামায়াতের প্রশংসা করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী অতীতে আমাদের সঙ্গে সুন্দর রাজনীতি করেছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, আমাদের জাতীয় ঐক্য দরকার। আগামী অন্তত তিনটি টার্ম একসঙ্গে রাজনীতি না করলে ফ্যাসিবাদ আবার চলে আসতে পারে। অন্ধকারে পড়তে পারে দেশ। এখনো সময় আছে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, হেফাজতে ইসলামের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াসিন হাবিব, জেলা খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জেএইচএম ইউনুছ।
জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী, জেলা জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা দেলোয়ার হোছাইন, সাবেক ককসু ভিপি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বাহাদুর।
পবিত্র কুরআনের দারস পেশ করেন মাওলানা শফিউল হক জিহাদী।
উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিস জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ মুছা, জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাম্মদ হেদায়াত উল্লাহ, আল আমীন মু. সিরাজুল ইসলাম, কক্সবাজার প্রেস ক্লাব সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি জিএএম আশিক উল্লাহ, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরোয়ার কামাল, সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ বাহাদুর, সিনিয়র সাংবাদিক নূরুল ইসলাম, কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রহমত সালাম, কক্সবাজার ইসলামিয়া মহিলা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফরিদুল আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে ইফতার পূর্ব দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মাহমুদুল হক।