শিরোনাম :
মহেশখালীর কালারমারছড়ার জলদস্যু সরদার হাসান নুরী গ্রেফতার কক্সবাজারে ট্যুরিজম এন্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ইসলামী শ্রমনীতি ব্যতীত শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়-আব্দুল্লাহ আল ফারুক ছাত্র জনতার বিজয়ের মাধ্যমে মানবতার বিজয় সুচিত- মুহাম্মদ শাহজাহান পেকুয়ায় বিরোধীয় জায়গায় স্হাপনা নির্মাণকে কেন্দ্র করে হামলাঃ আহত ৬ কৈয়ারবিল ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানি অভিযোগ কক্সবাজার শিশু সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম এর সাধারণ সভা আজ সে ভয়াল ২৯ এপ্রিল:উপকূলবাসীর স্বজন হারানোর দিন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ রামুতে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশা চালক নিহত এবং তিনজন আহত

কক্সবাজারে রাখাইন সম্প্রদায়ের জলখেলী উৎসব শুরু

নিউজ রুম / ২০ বার পড়ছে
আপলোড : বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন

সাকলাইন আলিফ :

কক্সবাজারে রাখাইন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘সাংগ্রাং’ বা ‘জলকেলি’ উৎসব শুরু হয়েছে। এই উৎসবটি রাখাইনদের নববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের তিন দিন পর, অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়। এবারও ১৭ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এই জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাখাইন পল্লী গুলো সাজানো হয়েছে। তরুণ তরুণীরা একে অপরকে মঙ্গল জল ছিটিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। কক্সবাজারে আগত পর্যটকরা ভিড় করছে রাখাইন পল্লীগুলোতে।

উৎসবে মাতোয়ারা রাখাইন সম্প্রদায়। এ উৎসব উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ।

প্রতিবছরের মত এবারও রাখাইন সম্প্রদায়ের পুরানো রাখাইন বর্ষকে বিদায় ও নতুন রাখাইন বা মগী সন কে বরণ করতে সাংগ্রে পুয়ে বা জলখেলী উৎসব উদযাপন করে থাকে। তার অংশ হিসেবে এবারও ১৬ এপ্রিল বৌদ্ধ স্নানের মাধ্যমে বর্ষবরণের এই উৎসব শুরু হয়।

রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং জানান,

কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে প্যান্ডেল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার মহেশখালী, টেকনাফ, চকরিয়া, রামু, চৌফলদণ্ডী, হারবাংসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৪০টি মণ্ডপে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উৎসবে স্থানীয় রাখাইনদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষও অংশগ্রহণ করেন, যা উৎসবটিকে একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত করেছে। আমরা মঙ্গলজল ছিটিয়ে পুরানো বছরকে বিদায় ও নতুন রাখাইন বর্ষকে স্বাগত জানায়, যুগ যুগ ধরে আমরা এটি পালন করে আসছি।

‘সাংগ্রাং’ উৎসবের মূল আকর্ষণ হচ্ছে জলকেলি, যা রাখাইন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। তারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ান এবং একে অপরকে জল ছিটিয়ে আনন্দ উদযাপন করেন। এ উৎসবের মাধ্যমে পুরাতন বছরের সকল গ্লানি ও দুঃখ দূর করে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়।

মন্ডপে আসা মালা রাখাইন বলেন, এটি আমাদের বাৎসরিক একটি মিলন মেলা, আমরা একে অপরের সাথে জল ছিটিয়ে আনন্দ বিনিময় করি। মঙ্গল কামনা করি।

কবি কামরুল হাসান বলেন,এই জলকেলি উৎসব শুধু রাখাইন সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; স্থানীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষও এতে অংশগ্রহণ করেন। এটি একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আনন্দে মেতে ওঠেন।

উৎসবের সময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রা এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়, যা এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে আরও সমৃদ্ধ করে।

এই উৎসবের মাধ্যমে কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উদযাপন করে এবং নতুন বছরের আগমনকে আনন্দের সাথে বরণ করে।

এই উৎসব দেখার জন্য অনেক পর্যটকও রাখাইন পল্লীগুলোতে ভিড় করে।

খুলনার ডুমুরিয়া থেকে কক্সবাজার বেড়াতে আসা পর্যটক রহিম আফরোজ বলেন, রাখাইন সম্প্রদায়ের এই উৎসব দেখতে আমরা কক্সবাজার শহরের বড়বাজার রাখাইন পল্লীতে আসলাম। তাদের এই উৎসব দেখে আমরা অনেক আনন্দ পেলাম।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক সাজ্জাদ, রফিক, আসলাম, মহিমা ও আফ্রিদি বলেন, রাখাইনদের উৎসব দেখে আমরা অনেক মজা পেলাম। এবারের কক্সবাজার ট্যুরে আমাদের জন্য এটা ছিল বাড়তি পাওয়া।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন শাহিন বলেন,এই উৎসবটি রাখাইন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ ।উৎসবের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ টহল দিচ্ছে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তা বল এর মধ্যে থাকবে পুরো কক্সবাজারের রাখাইন পল্লীগুলো।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর