বিডি বিনোদন :
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফিল্ম সোসাইটি (ডিইউএফএস) এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর যৌথ আয়োজনে ১৪শ (চতুর্দশ) আন্তর্জাতিক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (আইআইইউএসএফএফ) গতকাল সমাপ্ত হয়েছে, যেখানে সিরিয়ার পরিচালক মুশিরফ শেখ জেইন বিজয়ী হয়েছেন “শর্ট ফিল্ম অন রিফিউজি” ক্যাটাগরিতে তাঁর “কিলিং বাঘিরা” সিনেমার জন্য। “কিলিং বাঘিরা” নিরাপত্তার খোঁজে পালানো শরণার্থীদের ঝুঁকি, চ্যালেঞ্জ ও অনুভূতির একটি অনন্য গল্প।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, “সিনেমা হচ্ছে যোগাযোগ স্থাপনের এবং মানুষকে সংযুক্ত করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এর পরিধি সীমান্ত, ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষাকে অতিক্রম করে সচেতনতা ও সহানুভূতি তৈরি করে; যার মাধ্যমে আমরা পাই সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্য। সিনেমা আমাদের শেখায়, ভাবায়, আর পারস্পরিক বন্ধন দৃঢ় করে”।
এই বছর বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাঙ্গামাটি ও সিলেট জেলায় পুরো প্রতিযোগিতার সিনেমাগুলো প্রদর্শিত হয়েছে, যার মধ্যে ছিল “শর্ট ফিল্ম অন রিফিউজি” বিভাগের জন্য জমা দেওয়া ১৭০টি সিনেমার মধ্যে বাছাইকৃত ১৬টি সিনেমা। সিনেমাগুলো তুলে ধরে সারা বিশ্বের তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতিভা; এবং এর পাশাপাশি মিশর, জার্মানি, ভারত, ইতালি, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিরিয়া, তিউনিসিয়া ও তুরস্কের শরণার্থীদের জীবনের গল্প।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট নাট্য ও সিনেমা ব্যক্তিত্ব নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বলেন, “এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে প্রতিভাবান তরুণরা আমাদের পারস্পরিক দায়িত্ব সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করে। এই চলচ্চিত্র উৎসবে সহায়তা করার জন্য ইউএনএইচসিআর-কে ধন্যবাদ জানাই। এই সমর্থনের শুধুমাত্র আর্থিক মূল্যই রয়েছে এমনটা নয়, এটি তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্যও এক বিশাল অনুপ্রেরণা”।
ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও আরও বলেন, “আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে ডিইউএফএসকে সহযোগিতা করতে পেরে গর্বিত। এখানে তরুণরা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শরণার্থী বিষয়ক বাস্তবতা তুলে ধরতে পারে; যেন বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যান্য অংশে সচেতনতা তৈরি ও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। এখানে এবং সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিটি শরণার্থীরই আলাদা আলাদা গল্প রয়েছে। যেহেতু পৃথিবীতে বাস্তুচ্যুতির ঘটনা এখনও অব্যাহত রয়েছে, তাই শরণার্থীদের প্রত্যয়, আশা ও স্বপ্নগুলো বাঁচিয়ে রাখতে এবং তাদের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে এই ধরনের প্ল্যাটফর্মসহ এই গল্পগুলো বলার জন্য চলচ্চিত্রের শক্তির প্রয়োজন”।
ইন্টারন্যাশনাল ইন্টার ইউনিভার্সিটি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের এই সংস্করণটি ইউএনএইচসিআর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতার পঞ্চম বছরে পদার্পণ করেছে। ছয়জন স্বনামধন্য বাংলাদেশী চলচ্চিত্র সমালোচকদের নিয়ে জুরি গঠিত হয়েছিল।