এবার অধ্যক্ষের অপসারণ ও ক্লাস চালুর দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিউজ রুম / ৬৫ বার পড়ছে
আপলোড : রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক রামু :

কক্সবাজারের রামু সরকারি কলেজের  অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস এবং অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে ‘দফা এক দাকি এক,অধ্যক্ষের পদত্যাগ’ স্বৈরাচারের আস্তানা রামু কলেজে হবেনা’ নানা শ্লোগান ধরে বিক্ষোভ করেন।

সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ৯ টা থেকে  বেলা ১২ টা পর্যন্ত কলেজ প্রাঙ্গনে এ প্রতিবাদী  কর্মসুচি পালন করা হয়।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাঁধাসৃষ্টি, ছাত্রলীগ ও পুলিশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি, মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকী, সরকার পতনের পর থেকে টানা কলেজে অনুপস্থিত, অনিদিষ্ট কালের জন্য ক্লাস স্থগিতের ঘোষনা এবং ৬ ঘন্টা ক্লাসের মধ্যে তিনঘন্টা পর ক্লাস ছুটি দেওয়াসহ সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারনের দাবিতে এ কর্মসুচি পালন করা হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমদাদুল হক বলেন,সম্প্রতি জেলাজুড়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে তিনি রামু কলেজে কোনো ধরনের আন্দোলন করতে দেননি। ছাত্রলীগ ও পুলিশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি, মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকী দিয়েছেন। আমরা আওয়ামীলীগ সরকারের দোসর এই অধ্যক্ষের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ চাই।

যোগদানের পর থেকে অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম কলেজে নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন এ কথা জানিয়ে এমদাদুল বলেন, ২৪ ঘন্টার মম্যে
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসুচি দেওয়া হবে।

আরেক শিক্ষার্থী সাজিব বলেন,সরকার পতনের পর থেকে অধ্যক্ষ টানা কলেজে অনুপস্থিত। আমরা প্রতিদিন খোঁজ নিয়েছি,পাইনি।  এমনকি কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেননি। এরই মধ্যে গত রোববার প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হলে মাত্র একঘন্টা পর ছুটি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়,আন্দোরনরত শিক্ষার্থীদের ভয়ে আজ সোমবার থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য সকল শ্রেণীর ক্লাস স্থগিত করে দেন। আমরা কাল থেকে ক্লাস চালু করার দাবি জানাই এবং অধ্যক্ষের অপসারন চাই।

দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন ৬ঘন্টা ক্লাস হওয়ার কথা,গড়ে তিনঘন্টাও হয়না। এভাবে বছর শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এসব বিষয়ে অধ্যক্ষের কোন দায় নাই। তিনি নিজেই বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মঈদুল হাসান জিহাদ বাংলানিউজকে বলেন, অতিরিক্ত ফি আদায়,ভর্তি বাণিজ্য, ভূয়া প্রকল্প বানিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
আমরা দুর্নীতিমুক্ত রামু কলেজ চাই।

শিক্ষার্থী মোরশেদ আলম বলেন, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এই অধ্যক্ষের অনিয়ম দুর্নীতির খবর বাংলানিউজসহ প্রিন্ট,ইলেকট্রনিক ও অনলাইনের অন্তত ৩০ টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। মন্ত্রনালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর,দুদক এসব অনিয়মের তদন্তও করেছে। কিন্তু জানতে পেরেছি আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে এবং তদন্ত কমিটির লোকজনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এসব দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।
আমরা অবাক হই,এত কিছুর পরে তিনি এই পদে বহাল আছেন।

সোমবার ক্লাস বন্ধ থাকায় কলেজে কোন শিক্ষকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। তবে অধ্যক্ষের পাশের কক্ষে বসা ছিলেন অধ্যক্ষের ঘনিষ্টজন হিসাবে পরিচিত গণিত বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সুপ্রতীম বড়ুয়া। তিনি দাবি করেন,সোমবার তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন অধ্যক্ষ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান।

তবে এ সময় শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়ার ডকুমেন্ট দেকতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি।শিক্ষার্থীদেন দাবি,সরকার পতনের পর থেকে অধ্যক্ষ কাউকে দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই দিনের পর দিন কলেজে অনুপস্থিত রয়েছেন।

প্রসঙ্গত প্রশংসাপত্র বিতরণ, ভর্তি বাতিল, নির্বাচনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জরিমানাসহ কয়েকটি খাতে বিনা রসিদে টাকা আদায়,অসংখ্য ভুয়া প্রকল্প বানিয়ে কোটি টাকা আত্মসাত, কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের নাম ধরে ডাকা, শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, সরকারিকরণের পাঁচ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেসরকারি নিয়মে বেতন ও অন্যান্য ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের বিরুদ্ধে বাংলানিউজসহ বিভিন্ন গণ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু সরকার বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর