কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম

নিউজ রুম / ৬৪ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন

সাকলাইন আলিফ :

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজারে। পর্যটকদের সমাগমে মুখরিত সমুদ্র সৈকত সহ পর্যটনেস্পট গুলো। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
পর্যটকদের আগমনী খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

বর্তমান চলছে পর্যটন মৌসুম। একটু একটু শীতের আমেজ ও পড়ছে। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কক্সবাজারে পর্যটকের সমাগম ঘটে। মুখরিত হয়ে ওঠে পর্যটকদের সমাগমে পর্যটন স্পোর্ট গুলো। শুক্র শনি দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটিতে কক্সবাজারে ছুটি আসেন দেশী বিদেশী পর্যটকরা। তারা সৈকতের নীল জলরাশি আর বালুচরে সময় অতিবাহিত করেন।
ঢাকা থেকে আসা লিজা ও তার স্বামী নুরুল হক বলেন, তারা ১৪ জনের একটি গ্রুপ এসেছেন বৃহস্পতিবার। তবে সকালের টাইমে গরম থাকায় বিকেলের টাইমে তারা সৈকতে নেমেছেন। লিজা আক্তার বলেন, সুগন্ধা পয়েন্ট রাতের তিনটা পর্যন্ত সৈকতে ছিলাম, খুব ভালো লেগেছে।
নরসিংদীর সিরাজদিখান থেকে আসা পর্যটক রাসেল বলেন, অনেকদিন পর এবার কক্সবাজার আসলাম ট্রেনে করে ভালোই লেগেছে। একটু একটু শীত পড়ার কারণে কক্সবাজারে যেমন ভালো লাগছে তেমনি তেমনি ট্রেনের যাত্রা ও ভালো ছিল।
ঝালকাঠি থেকে এসেছেন আফরোজুল হকসহ তিন বন্ধু। শীতের আমি যের সাথে রাতের সৈকতে ভালো সময় কাটছে বলে তারা জানালেন। তবে খাবারের দোকানগুলোতে অতিরিক্ত দাম বলে অভিযোগ করেন এই পর্যটকরা।
টুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি এস এম কিবরিয়া বলেন,কক্সবাজারে সড়ক বিমানের পাশাপাশি রয়েছে রেলপথ। এই তিন পথে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসছেন কক্সবাজারে।
কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ.ন.ম হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রকৃতিপ্রেমী মানুষগুলো প্রকৃতির টানেই কক্সবাজার ছুটি আসছেন। প্রতিদিন ট্রেন রয়েছে। সেই সাথে আছে বিশেষ ট্রেন। এর মধ্যে রাত দশটা পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বিমান উঠানামার কারণে পর্যটকরা সহজেই এই প্রকৃতির ছোঁয়া পাচ্ছে।
তবে পর্যটন স্পোর্ট গুলোর পরিবেশ প্রকৃতির ধরে রাখার গুরুত্ব দিলেন তিনি। সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ নাগরিক ফোরামের।
কক্সবাজার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কৈইয়ুম চৌধুরী বলেন, শীত পড়ার সাথে সাথে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন ঘটছে। দীর্ঘদিন আমাদের ব্যবসায় মন্দাভাব ছিল। পর্যটকের আগমনের কারণে এখন ব্যবসা আগের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরো ভালো হবে।
হোটেল দ্যা কক্স টুডের জিএম আবু তালেব শাহ বলেন, এখন বুকিং ভালো পাচ্ছি। সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে ভালো বুকিং থাকে। সামনের দিনগুলো পরিচিতি ভালো থাকলে আমরা অনেক পর্যটক পাব।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আমরা সব সময় পর্যটকদের সেবা দিয়ে আসছি। তারা আমাদের জন্য টাকা নিয়ে আসছে। তারা আমাদের অতিথি। এভাবে যেন সবগুলো হোটেল তাদের ভালো ব্যবহার করে সেই বার্তাটা আমরা সব মালিককে দিয়ে দিয়েছি। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে এখন আল্লাহর রহমতে আমাদের ব্যবসা অনেক ভালো হচ্ছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও ইনানি ,হিমছড়ি, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ, মাতিনের কুপ, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, মহেশখালীর বৌদ্ধমন্দির, রামুর বুদ্ধমন্দির, সাফারি পার্ক সহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট গুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে থাকে। শহরে যানজট নিরসন সহ পর্যটকরা জানতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে অনলাইন বাস টার্মিনাল সহ অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
টুরিস্ট পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বিশেষ নজরদারী বাড়ানো হয় টুরিস্ট পুলিশের। নিয়মিত টহল ব্যবস্থায় অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়া হচ্ছে। রাতেও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সৈকত সহ পর্যটন স্পট গুলো নিরাপত্তা আওতায় থাকে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পর্যটকদের সব বিষয়গুলো আমরা খুবই গুরুত্বসহকারে নিয়ে থাকি। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি টিম সার্বক্ষণিক সেখানে কাজ করে। পর্যটকরা কোন প্রকার জাতীয়করণের শিকার না হয় সে যেন বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টের সম্মুখে অভিযোগ কেন্দ্র রয়েছে। পর্যটকরা হয়রান শিকার হলে সেখানে অভিযোগ দিতে পারেন।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর