শিরোনাম :
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফরে আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা উখিয়ায় সংরক্ষিত বন থেকে বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন উখিয়ায় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে এডভোকেসী সভা অনুষ্ঠিত “আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে -মুহাম্মদ শাহজাহান পেকুয়ায় বিয়ের দাবীতে প্রবাসীর বাড়িতে তরুণীর বিষপান পেকুয়ায় ব্যবসায়ীকে হামলা ও দোকান লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন কক্সবাজারে মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কক্সবাজারে নারীর প্রতি সংহিসতা নিরোধে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল বেতুয়ায় ১৪ বসতবাড়ী জ্বলে-পুড়ে ছাঁইঃক্ষয়ক্ষতি প্রায় ২কোটি টাকা

অরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অর্থ সম্পাদক বিদেশী অস্ত্র সহ গ্রেফতার

নিউজ রুম / ৪৮ বার পড়ছে
আপলোড : শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন

বাবু কান্তি দে :
মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)এর একজন শীর্ষ নেতা ও অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুসকে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালীর তাজনিমার খোলা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশী অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকালে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুর রহমান।

২৪ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১০টার দিকে র‌্যাব কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালীর তাজনিমার খোলা এলাকায় এ অভিযান চালায় বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়। গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ ইউনুস (৪০) উখিয়ার ১৯নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি/১৩নং ব্লকের মৃত হাবিবুল্লাহর পুত্র।

র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুর রহমান জানান, উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবির ও এর সংলগ্ন গহীন পার্বত্য এলাকাসমূহে ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা)’সহ বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। যার কারণে শরণার্থী শিবির ও স্থানীয় এলাকাবাসীকে সবসময় ভীত সন্ত্রস্ত থাকে। র‌্যাব-১৫ এ সকল সন্ত্রাসী গ্রুপের শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় উখিয়ার পালংখালীর তাজনিমার খোলা এলাকায় অভিযান চািলিয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) এর শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস’কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার হেফাজত হতে বিদেশী ১টি রিভলবার ও ৬ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ১টি স্মার্ট মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

জামিলুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত মওলানা মোহাম্মদ ইউনুস জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক। সে মিয়ানমারে থাকাবস্থায় মংডু টাউনশীপের মেরুল্লা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতো এবং শিক্ষকতার আড়ালে আরসার হয়ে কাজ করতো। ২০১৬ সালে সে ‘আরসা’ সদস্য মৌলভী আরিফুল্লাহ এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘আরসা’ এ যোগ দেয়। সে আরসার আমীর আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী, ওস্তাদ খালেদ, সমিউদ্দিন এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আলেম-ওলামা, হেডমাঝি, সাবমাঝি ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের সাথে মিটিং করে আরসা সংগঠনে যোগদানের জন্য উৎসাহ প্রদান করতো। এছাড়াও সে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আরসার অর্থ সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এবং আর্থিক তহবিল পরিচালনা করছে বলে জানা যায়। ২০১৭ সালে সে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-১৯ এ অবস্থান করতে থাকে। আরসার অর্থের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে মাওলানা ইউনুস জানায়- তার নিকট প্রতিমাসে সৌদি আরব থেকে আবুল বশর ১ লক্ষ টাকা, মৌলভী ইসমাইল ১ লক্ষ টাকা, পারভেজ ১৫ হাজার টাকা, আমেরিকা থেকে জহুর আলম ১ লক্ষ টাকা, মালয়েশিয়া থেকে হারুন ১ লক্ষ টাকা, থাইল্যান্ড হতে হারুন ৬৫ হাজার টাকা এবং সৌদি আরব থেকে মোঃ ইসলাম প্রতিবছর ১ লক্ষ টাকাসহ সর্বমোট ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা প্রেরণ করে। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া থেকে অজ্ঞাত রোহিঙ্গা টাকা প্রেরণ করে বলে জানা যায়। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রাম হতে চাঁদা সংগ্রহ করা হয়। প্রতিমাসে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১০-১৫ লক্ষ টাকা আরসার ক্যাম্প জিম্মাদারদের নিকট আসে। প্রাপ্ত অর্থসমূহ দিয়ে অস্ত্র কেনা ও দলের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা/বেতন দিয়ে থাকে। বর্তমানে ইউনুসের নিকট তার বিকাশ একাউন্ট আনুমানিক ৩৩ থেকে ৩৭ হাজার টাকা রয়েছে বলে জানা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়- ইউনুস আরসার সংগঠনের জন্য গত এপ্রিল হতে জুন পর্যন্ত ৩ মাসে আরসা সমর্থিত বিভিন্ন গ্রুপ, ব্যক্তি ও সংগঠন হতে প্রায় ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৫ টাকা প্রাপ্ত হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মাওলানা ইউনুস জানায় আরসার গ্রুপে ২ শত থেকে ২৫০ জন সদস্য রয়েছে।

মোহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হেডমাঝি আনোয়ার হত্যা, মোহাম্মদ রফিক হত্যা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগনোর নির্দেশদাতা, এপিবিএন সদস্যদের উপর হামলা সহ ৫টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদ্রাসায় ৬জন শিক্ষক ও ছাত্রকে নৃশংসভাবে হত্যা, ইসলামী মাহাযের নেতা রফিক হত্যা, ইসলামী মাহাযের নেতা হাফেজ মাহবুব হত্যায় জড়িত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে সে।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর