বিডি প্রতিবেদক :কক্সবাজার শহরের কলতালী হোটেল-মোটেল জোনের ‘সী কক্স’ আবাসিক হোটেলের স্টাফ কোয়ার্টারে খালেদ আশরাফ বাপ্পি (২২) নামে এক যুবকের রহস্যনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই হোটেলের ফ্রন্ট ডেস্কের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রবিবার (৭ আগস্ট) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কলাতলী হোটেলের স্টাফ কোয়ার্টারে অপমৃত্যুর এ ঘটনা ঘটে।
রহস্যনক মৃত্যু হওয়া খালেদ আশরাফ বাপ্পি কক্সবাজার সদরের বাংলাবাজার কাজীর রোড এলাকার বাসিন্দা। তিনি কক্সবাজার সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ওই হোটেলে সে পার্ট টাইম চাকুরী করতেন।
সী কক্স হোটেলের রিজার্ভেশন অফিসার অর্ণব বলেন, ‘হোটেল থেকে কিছু দূরে পাহাড়ের সাথে লাগোয়া হোটেলের স্টাফদের কোয়ার্টার। ওখানে স্টাফরা রাত্রিযাপন করেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হোটেলের ডিউটি শেষ করে বাপ্পি স্টাফ কোয়ার্টারে চলে যান। পরে তাকে মৃত অবস্থায় বাসার থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় বাসায় কেউ ছিল না। এবং তার রুমটি ভেতর থেকে ‘লক’ করা ছিল।’
তবে পরিবারের দাবি খালেদ আশরাফ বাপ্পীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত বাপ্পীর মা রোকেয়া বেগম বলেন,অনেকেই আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু আমি বলবো আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো কোন ছেলে নয়।
তিনি বলেন, আমার ছেলের সাথে মুফিজ নামের এক যুবকের সাথে পরিচয় ছিল। পরিচয় সূত্রে আমার ছেলে ধার দেনা ও ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যবসার জন্য মুফিজের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু মুফিজ করোনা ও দোকান ভেঙ্গে ফেলার অজুহাতে আমার ছেলে কে টাকা ফেরতের কথা বলে সময় নিতে থাকে। তার মায়ের ধারণা ঠান্ডা মাথায় তার ছেলে বাপ্পী কে হত্যা করা হয়েছে।
খালেদ আশরাফ বাপ্পীর ছোট ভাই রিহাদ জানান, রবিবার দিবাগত রাত ১২ টা ৩০ মিনিটের সময় একই এলাকার সম্পর্কে চাচা নুরুল আজিমের ফোনে একটি কল আসে। ফোন করে বলে বাপ্পী মারা গেছে আপনারা তারাতারি আসেন। তখন নুরুল আজিম রিহাত কে সাথে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে জানতে পারে বাপ্পী কে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছোট ভাই রিহাতের দাবি, তার বড় ভাইয়ের সাথে ব্যবসায়িক পার্টনার মুফিজ এই হত্যকান্ড ঘটিয়েছে। সে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। লাশের ছুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন হলে সে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক রিয়াজ জানান, মরদেহটি হাসপাতালে ছিল। সূত্রানুসারে জানতে পারলাম হোটেল সী কক্সের ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের ২য় তলায় একটি ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। পরে আমরা ঘটনাস্থলে এসে রুম তল্লাশি করে আলামত হিসেবে ফাঁসের একটি গামছা ও মোবাইল জব্দ করা হয়। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
সদর থানার ওসি তদন্ত মো. সেলিম জানান, ‘রবিবার দিনগত রাতে মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে জানতে পেরেছি। এরপরও যদি কোনো অভিযোগ পাই তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।