শিরোনাম :
মহেশখালী ঘাটের অনিয়ম বন্ধ ও সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম প্রকল্প বাতিলের দাবি উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের জেরে আরসা ও আরএসও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক যুবক নিহত এবং পাঁচজন আহত মায়ের ডাক’র সমন্বয়ককে তুলে নেওয়ায় মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ কৃষকের ফসল নষ্ট, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব সহ ৭৬ জনের নামে মামলা বদির ‘আন্তর্জাতিক ক্যাশিয়ার’ ফারুককে গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান, দুর্বৃত্তদের হামলা মাহমুদুর রহমানের কারাগারে যাওয়া নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল কীভাবে ভারতে গেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? দেশে ফিরলেন মিজানুর রহমান আজহারী টেকনাফের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা রক্ষাসহ ১২দফা দাবী বাস্তবায়ন না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী বৈষম্য মুক্ত শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় রাসূলুল্লাহর স.- আদর্শই একমাত্র পথ “-মুহাম্মদ শাহজাহান

ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় ..

নিউজ রুম / ২৭ বার পড়ছে
আপলোড : বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :

কক্সবাজার সদরের খুরুশকূলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে বাড়ি ফেরার পথে ‘পুলিশের উপস্থিতি’ ছাত্রলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার মূল হতাকে আটক করেছে রেব। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ফুসে উঠেছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনেকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করেছে পুলিশ ও দলের নেতাকর্মীদের। রোববার রাতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজার শহরের প্রবেশদ্বার লিংক রোড এলাকার একটি বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা আজিজ কে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার একজন জন প্রতিনিধি। তবে কক্সবাজার তো রিপিড একশন ব্যাটেলিয়ান রেব ১৫ এর অধিনায়ক খায়রুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, তাদের অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে , সবকিছু শেষ হলে অফিসিয়াল বক্তব্য দেওয়া হবে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন জানান, রোববার রাত সোমবার (০৪ জুলাই) বেলা ১১টা পর্যন্ত সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তারমধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, তহুরা, রহিমা ও সেলিম। এরা জহিরের স্ত্রী বোন ও শ্যালক। বাকি তিনজনকে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকা থেকে এ গ্রেফতার করা হয় বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
রোববার (০৩ জুলাই) বিকেলে খুরুশকূল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলন দেখতে যান সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল উদ্দিন। সন্ধ্যায় সম্মেলন শেষে অটোরিক্সাযোগে বাড়ি ফেরার পথে খুরুশকূল ইউনিয়নের ডেইলপাড়ায় পৌছালে, একদল দুর্বৃত্ত অটোরিক্সা থামিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে তাকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এঘটনায় স্বজন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ; ‘ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থলের বাইরে একদল সশস্ত্র লোকজনকে দেখতে পেয়ে হামলার আশঙ্কা করেছিলো ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিন। পরে আওয়ামী লীগের নেতারা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ তাকে একটি অটোরিক্সায় তুলে দিয়ে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেন। অটোরিক্সাটি পেছনে ছিল পুলিশের গাড়িটিও। এক পর্যায়ে ফয়সালকে বহনকারি গাড়িটি ডেইলপাড়ায় পৌছালে একদল দুর্বৃর্ত্ত গাড়িটি থামিয়ে ‘পুলিশের উপস্থিতিতে’ এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।’
এ ঘটনায় ফুসে উঠেছে কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দীন হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করেছেন।
রবিবার রাতে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ‘ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে ফয়সালের ওপর প্রথম আঘাত করে একদল যুবক। তিনি পুলিশকে ফোন করে সহায়তা চাইলে সদর থানার এসআই রায়হানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। এক পর্যায়ে আজিজ সিকদার ও তার ভাই জহির পুলিশের সামনেই ফয়সালকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।’
এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে তিনি বলেন, পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই ফয়সাল খুন হয়েছে। ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
খুনের নেপত্য ঘটনা
ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দীন তার নৃশংস হত্যার কারণ এবং হত্যার আগ মুহূৃতের ঘটনা নিয়ে নানান কথা ছড়িয়েছে।
হত্যার কারণ হিসেবে প্রধান ঘাতক আজিজ সিকদারের ভাতিজা খুনের জের।
জানা গেছে, আজিজ সিকদারের নিহত ভাতিজা নূরুল হকের সাথে ফয়সালে নারীঘটিত দ্বন্দ্ব ছিলো। ফয়সালের স্ত্রীকে নুরুল হক ডিস্টার্ব করতো বলো অভিযোগ ছিলো তার। সে দ্বন্দ্বের জেরে নিহত নুরুল হক হত্যায় ফয়সালের হাত ছিলো বলে অভিযোগ প্রকট হয়। নারীঘটিত ইস্যু এবং নূরুল হকের খুনের ঘটনায় ফয়সালের উপর ক্ষুব্ধ ছিলো নূরুল হকের স্বজনেরা।
অন্যদিকে নেতাদের কাছে আশ্রয় চেয়ে না পাওয়া এবং থাকে ফেলে নেতাদের সটকে পড়ার বিষয়টি এখন বেশ আলোচিত হচ্ছে। একই সাথে ঘটনার সময় পুলিশের ভুমিকা নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন ফয়সাল উদ্দীনের স্বজনেরা।
তবে নেতারা বলেছেন, তারা হামলাকারী আজিজ সিকদারকে কয়েকবার নিবৃত করেছেন। তাকে নানাভাবে বুঝিয়ে তাড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু সে যে ওৎপেতে সেটি জানা ছিলো না।
স্বজনেরা দাবি করেছেন, পুলিশের সামনেই তাকে হত্যা করেছে। এই অভিযোগটি হাসপাতাল আঙিনায় চিৎকার করে বলছিলেন ফয়সালের এক ভাই।
তবে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস জানিয়েছেন, হামলার চেষ্টার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ততক্ষণে হামলা সংঘটিত হয়ে যায়।
নিহত ফয়সাল উদ্দীন ইউনিয়নের কাউয়ারপাড়া এলাকা মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ৩ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে খুরুশকুলের ডেইলপাড়ায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনায় রাতে কক্সবাজার শহরে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা টায়ার জ্বালিয়ে দীর্ঘক্ষণ সড়ক অবরোধ করে। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে কঠোর কর্মসুচীর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে রোববার রাত থেকেই অভিযান শুরু করে। এতে সোমবার সকাল পর্যন্ত খুরুশকূল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নারীসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পুলিশ হেফাজতে আনা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহ হওয়ায় ৬ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সেলিম উদ্দিন আরও বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বেলা ১২টায় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত স্বজনদের কাছ থেকে কোন এজাহার পাওয়া যায়নি। এজাহার পেলে গ্রেফতারদের মামলায় আসামী দেখানো হবে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জসীমউদ্দীন জানান, সোমবার বিকেল চারটায় খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে জানাজা শেষে কাউয়ার পাড়া বড় জামে মসজিদ সংলগ্ন গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান পিপিএম বলেন, এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনার পর থেকে পুলিশের বিভিন্ন টিম, যদি তোদের গ্রেফতার এ কাজ করছে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি নিজেই বিষয়টি তদারকি করছেন বলেও জানান।

 


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর