বিডি প্রতিবেদক রামু :
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় কুপিয়ে ও গুলি করে বাবা-ছেলেকে খুন করেছে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে দুইগ্রুপের মধ্যে বিরোধের জের ধরে জোড়া খুনের এ ঘটনা ঘটেছে।
রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান জানিয়েছেন, রোববার মধ্যরাত ১ টার দিকে রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর থোয়াইঙ্গাকাটা মৌলভীরঘোনা এলাকার নজরুল ইসলামের চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহতরা হলেন, একই এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জাফর আলম (৫৫) এবং তার ছেলে মো. সেলিম (৩৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি কারা, কি কারণে ঘটিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় দুইপক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের বরাতে আবু তাহের দেওয়ান বলেন, রোববার মধ্যরাতে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইঙ্গাকাটা মৌলভীঘোনা এলাকায় স্থানীয় স্টেশনের একটি দোকানে মো. সেলিমসহ কয়েকজন বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিল। এসময় মুখোশ পরিহিত ১৫/২০ জনের একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত অতর্কিত তার উপর হামলে পড়ে। এতে দূর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি কোপ দিলে তিনি শোর চিৎকার করে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ছেলের চিৎকার শুনে তাকে লক্ষ্য করে বাবা জাফর আলম টর্চের আলো ফেলেন। পরে দূর্বৃত্তরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়।
ওসি বলেন, “ দূর্বৃত্তরা পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা-ছেলেকে উদ্ধার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এসময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। “
নিহতদের স্বজন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাতে স্থানীয় একটি দোকানে আড্ডা দেওয়ার সময় মুখোশ পরিহিত একদল লোক ধারালো অস্ত্র ও গুলি করে বাবা-ছেলেকে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে কোন লোকজনের পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা তিনি জানেন।
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একই এলাকার আবছার ডাকাত এবং শাহীন ডাকাত গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তার এবং বার্মিজ গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করিয়া বিরোধ চলে আসছিল। রোববার রাতে শাহীন ডাকাত গ্রুপের ১৪/১৫ জন লোক চোরাচালানের গরু পার করার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখানে আবছার ডাকাত গ্রুপের ২০/২২ জন দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুক গিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এতে কুপিয়ে ও গুলি করলে মো. সেলিম গুরুতর আহত হন। এসময় সেলিমের বাবা জাফর আলম ছেলেকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর এবং গুলি করা হয়েছে।
ওসি আবু তাহের জানান, ঘটনার কারণ জানার পাশাপাশি জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।