শিরোনাম :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি বাড়ি পুড়ে ছাই,ক্ষয়ক্ষতি ৪০ লাখ টাকা সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ডাকাতের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ জেলে ফেরত এনেছে বিজিবি “১ টাকায় হাজার টাকার বাজার” নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবি শিশু সহ ২ জন নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার-৮ কক্সবাজারে নাতনির স্বামীর হাতে নানী খুন বিকাশের দোকান চুরিতে ২লাখ ৭০হাজার টাকা উধাওঃব্যথার ওপর সংবাদকর্মী ব্যথা নৌবাহিনীর অভিযান : মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুরি হওয়া কোটি টাকার মালামাল জব্দ মালয়েশিয়া বলে ইনানী সৈকতে শতাধিক রোহিঙ্গাকে রেখে পালালো দালালরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কক্সবাজারের অনেক এলাকায় খাবার পানির সংকট :ইয়াছমিন-রহিমার পানির দুঃখ ঘুচালো হাইসাওয়া

কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে প্রতিদিন গড়ে ১২ কোটি টাকার ক্ষতি

নিউজ রুম / ৩১ বার পড়ছে
আপলোড : মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১০ অপরাহ্ন

সাকলাইন আলিফ :

চলমান পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজারের পর্যটন খাতে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। কোটা সংস্কারের জেরে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে দেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজার। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীসহ এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা। এ সময় একদিনের ক্ষতি প্রায় ১২ কোটি টাকা। এ সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ীদের আড়াইশো কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে চেম্বার। সেই সাথে চলছে বৈরী আবহাওয়া। সব মিলিয়ে পর্যটন শিল্পে ভাটা পড়েছে।

অপরুপ সৌন্দর্য্যে ভরা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। এখানে সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। কিন্তু হঠাৎ কোটা সংস্কার ইস্যুতে সৃষ্ট কয়েকদিনের টানা চলমান কারফিউ ও সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে পর্যটনশূন্য হয়ে পড়েছে দেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজার।

তাই হোটেল-মোটেলে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। এমন অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার সৈকতের ফটোগ্রাফার রফিক উল্লাহ বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে একটি ছবিও তুলতে পারেনি। ছবি তোলার জন্য একজন পর্যটকও পাইনি আমি। একই অবস্থা অন্য ফটোগ্রাফারদের ও। সৈকতের বাদাম বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, প্রতিদিন আসি আর যাই। কিন্তু কোন বিক্রি হয় না। স্থানীয় কিছু মানুষ আসে, তাদের কাছে ১শ থেকে দেড়শ টাকার বাদাম বিক্রি করতে পারি। কিন্তু এই বিক্রি দিয়ে সংসার চলে না।

পর্যটক শূন্য কক্সবাজার সৈকতের চারদিকে সুনশান নীরবতা। ব্যস্ততা নেই সৈকতের ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক-ওয়াটার বাইক চালক ও ঘোড়াওয়ালাদের। একই সঙ্গে বালিয়াড়িতে খালি পড়ে আছে কিটকটগুলো।

২০ টি কিটকড দেখাশোনা করেন নুরুল আমিন, তার মতে এক সপ্তাহ ধরে কোন কাস্টমার নাই।

হোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি কলিম উল্লাহ বলেন, কোন পর্যটক নেই হোটেলগুলোতে। বলতে গেলে পর্যটক শূন্য এখন কক্সবাজার।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন,কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেলে নেই কোন পর্যটক। এমন অবস্থায় লোকসান গুনতে হচ্ছে হোটেল ব্যবসায়ীদের। পর্যটক না থাকলেও হোটেলের কর্মচারী কর্মকর্তার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে, পুরো হোটেলের অপারেশন ঠিক রাখতে হচ্ছে, সব মিলিয়ে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এসবের মাঝে নেই পর্যটক চলছে বৈরী আবহাওয়া। ঝড় বৃষ্টি, সবকিছুর মাঝে তাল মিলিয়ে হোটেল খোলা রাখতে হচ্ছে আমাদের।

হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল গুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৫ কোটি টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে। এখনো অবস্থার কোন উন্নতি হচ্ছে না।

কক্সবাজার রেস্তরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি নাইমুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, আমাদের কক্সবাজারে প্রায় ৪ শতাধিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে ব্যবসায়ীদের ২ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

টুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ টুয়াকের সভাপতি তোফাইল আহমদ বলেন, কক্সবাজারের হোটেল রেস্টুরেন্ট ছাড়া পর্যটন ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতি আমরা কিভাবে পুষাবো বুঝতে পারছি না।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের সহিংসতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আড়াইশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থা হলে অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকের কাছে দেউলিয়া হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুত সবকিছু ঠিক হয়ে আসবে।

এই ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট রা চেয়ে আছেন আবার কখন পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠবে কক্সবাজার সেদিকে।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর