বিডি প্রতিবেদক টেকনাফ :
বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশী ফিশিং ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করেছে মিয়ানমারের নৌ বাহিনী। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও ২ জেলে। ৫৮ মাঝি মাল্লা সহ ৬টি ফিশিং ট্রলার মিয়ানমারের নিয়ে আটক রাখার পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোস্টগার্ড এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় গতকালই। নিহত জেলের ময়না তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তার পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করে। রাতে দাফন করা হয় তার লাশ। আহত দুই জেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে কোস্টগার্ড।
এই পুরো ঘটনা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে টেকনাফে সংবাদ সম্মেলন করেছে কোস্টগার্ড।
কোস্টগার্ডেন টেকনাফ অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ড পূর্ব জুনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ জহিরুল হক পুরো ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন,গত ০৬ অক্টোবর টেকনাফ থানাধীন শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাট হতে ০৬ টি মাছ ধরার ট্রলার ৫৮ জন জেলেসহ গভীর সাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে গমন করে। গত ০৯ অক্টোবর সেন্টমার্টিন হতে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা অবস্থায় ভুলবশতঃ তারা মায়ানমার জলসীমায় প্রবেশ করে। এসময় মায়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিড বোট থেকে উক্ত ট্রলার সমূহকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে তিনজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়, এর মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। পরবর্তীতে মায়ানমার নৌবাহিনী তাদেরকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ট্রলারসহ আটক করে নিয়ে যায়। এসময় বঙ্গোবসাগরে টহলরত কোস্ট গার্ড জাহাজ তাজউদ্দিন বিষয়টি অবগত হলে মায়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত জাহাজ এর সাথে প্রযোজনীয় সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে আটককৃত জেলেদের ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২ টার সময় ০১ টি ট্রলার ১১ জন জেলে (০১ জন মৃত) কোস্ট গার্ড আউটপোস্ট শাহপরী এর সহায়তায় শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাটে এসে পৌছায়। অপর ০৫ টি ট্রলার ৪৭ জন জেলেসহ বিসিজিএস তাজউদ্দিন এর নিকট হস্তান্তর করা হলে জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার সরববারহ করা হয় এবং কোস্ট গার্ড আউটপোস্ট শাহপরী কর্তৃক সকলকে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
ক্যাপ্টেন মোঃ জহিরুল হক বলেন, ইতিমধ্যে কূটনীতিক পর্যায়ে এটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার পর বাংলাদেশ থেকে অফিসিয়াল প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জেলেদেরও সতর্ক হওয়া জরুরি। আমরা ট্রলার মালিক সমিতিকে বলেছি, তারা যেন তাদের ছেলেদের সতর্ক করেন, মাছ ধরতে গিয়ে মিয়ানমারের জনসীমায় যাতে প্রবেশ না করেন। তবে ভুলক্রমে কোন জেলে প্রবেশ করলে তাকে যেন হত্যা করা না হয় সে বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সাথে আলোচনা করে এরকম ঘটনা আর যেন না ঘটে সে ব্যাপারে কাজ করছে কোস্টগার্ড।