শিরোনাম :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি বাড়ি পুড়ে ছাই,ক্ষয়ক্ষতি ৪০ লাখ টাকা সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ডাকাতের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ জেলে ফেরত এনেছে বিজিবি “১ টাকায় হাজার টাকার বাজার” নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবি শিশু সহ ২ জন নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার-৮ কক্সবাজারে নাতনির স্বামীর হাতে নানী খুন বিকাশের দোকান চুরিতে ২লাখ ৭০হাজার টাকা উধাওঃব্যথার ওপর সংবাদকর্মী ব্যথা নৌবাহিনীর অভিযান : মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুরি হওয়া কোটি টাকার মালামাল জব্দ মালয়েশিয়া বলে ইনানী সৈকতে শতাধিক রোহিঙ্গাকে রেখে পালালো দালালরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কক্সবাজারের অনেক এলাকায় খাবার পানির সংকট :ইয়াছমিন-রহিমার পানির দুঃখ ঘুচালো হাইসাওয়া

কক্সবাজারে ডেঙ্গুর প্রকোপ

নিউজ রুম / ২২ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজারে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী কক্সবাজারে। স্থানীয়দের পাশাপাশি বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের হার। সুস্থতার হার ৯৯.৭৮ ভাগ। গর্ভবতী মা ও শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গু রোগে। তাই এদের বেশি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। দিনেও রাতে মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি বাড়ির আঙিনাসহ আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২৭ রোহিঙ্গা সহ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৩ জন।
তার মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ২২ জন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালে ১০ ও বসতবাড়িতে একজনের মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সিটে আবার মেঝেতে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের ছড়াছড়ি। আক্রান্তরা বলছেন, মশার জ্বালায় অতিষ্ট তারা।
কক্সবাজার শহরের নাজিরার টেক থেকে আসা ডেঙ্গু রোগী রশিদ আহমদ বলেন,জ্বর, মাথা ব্যথাসহ নানা উপস্বর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে
এই পর্যন্ত কক্সবাজারে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৩৩০ জন। যেখানে রোহিঙ্গা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৮৬ জন।
বেশী ডেঙ্গু আক্রান্তের এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনা, পাহাড়তলী, কুতুবদিয়া পাড়া, টেকপাড়া, সমিতিপাড়া, নুনিয়াছড়া, টেকনাফ উপজেলার কিছু এলাকা। এছাড়াও উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্প-৪, ক্যাম্প-৩, ক্যাম্প ১/ইস্ট, ক্যাম্প-২৪,২৬ ও ১১ কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় মূলত ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহারকে।
কক্সবাজার শহরের গোদারপাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই দিন ধরে। ডেঙ্গু আক্রান্তে হবার বর্ণনা দিয়েছেন। তার দাবি, প্রথমে জ্বর উঠলে ও স্বাভাবিক মনে হওয়ায় গুরুত্ব দেননি। যখন কয়েকদিন ধরে জ্বর বাড়ছে। তখন চিকিৎসকের দ্বারস্ত হন। তারপর ধরা পড়ে ডেঙ্গু। এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন চিকিৎসকের পরামর্শে।
কক্সবাজার শহরের তুরুস্কুল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুল কাদের বলেন, তিনি প্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফিরেন। মশার কামড়ে তিনি তার শরীরে অতিরিক্ত আঘাত দেখতে পান। তার কিছুদিন পর জ্বর, কাশি। এক পর্যায়ে তিনি বাসায় থাকতে না পেরে হাসপাতালে ভর্তি হন। তারও চিকিৎসা চলছে গেল চারদিন ধরে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: আশিকুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসেই সদর হাসপাতালে ৪৯ জনসহ উপজেলা স্বাস্থ ক্লিনিকগুলোতে ৩২৮ জন ডেঙ্গু রোগি ভর্তি হয়েছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু মশার উৎস সৃষ্টি হচ্ছে। মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশ এই চিকিৎসক। প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে বাসায় চিকিৎসা না নিয়ে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, কক্সবাজার জেলার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়েই চলছে।
সেখানকার মানুষজন এডিস মশা নিয়ে সচেতন নয়। এ রোগে শিশু ও গর্ভবতী মারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে জানিয়ে তাদের ব্যাপারে গভীর যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন বলেন, বাড়ির আশপাশে ও আঙ্গিনা সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। কক্সবাজার শহরের সমতি পাড়া কুতুবদিয়া পাড়া এলাকায়, প্লাস্টিকের মধ্যে সব সময় পানি জমে থাকে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এই চিকিৎসক। তিনি আরো জানান, কক্সবাজারে ডেঙ্গুতে সুস্থতার হার ৯৯.৭৮ ভাগ।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের ৩৪ টি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
এতো সংখ্যাক মানুষের এক সঙ্গে বসবাস। তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে অতিরিক্ত প্লাস্টিকের ব্যবহার। যার ফলে পানি জমছে। সেখান থেকে মশার উৎপাত বাড়ছে। এসমস্ত এলাকা চিহ্নিত করে সচেতনার কাজ চলছে। গেমগুলোর সিআইসিদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন দ্রুত এ ব্যাপারে সচেতনতা মূলক কর্মকাণ্ড চালান।
চিকিৎসকরা বলছেন, দিনেও রাতে মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি ডেঙ্গুর ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতীদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে পরিবারের অন্য সদস্যদের।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর