শিরোনাম :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি বাড়ি পুড়ে ছাই,ক্ষয়ক্ষতি ৪০ লাখ টাকা সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ডাকাতের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ জেলে ফেরত এনেছে বিজিবি “১ টাকায় হাজার টাকার বাজার” নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবি শিশু সহ ২ জন নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার-৮ কক্সবাজারে নাতনির স্বামীর হাতে নানী খুন বিকাশের দোকান চুরিতে ২লাখ ৭০হাজার টাকা উধাওঃব্যথার ওপর সংবাদকর্মী ব্যথা নৌবাহিনীর অভিযান : মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুরি হওয়া কোটি টাকার মালামাল জব্দ মালয়েশিয়া বলে ইনানী সৈকতে শতাধিক রোহিঙ্গাকে রেখে পালালো দালালরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কক্সবাজারের অনেক এলাকায় খাবার পানির সংকট :ইয়াছমিন-রহিমার পানির দুঃখ ঘুচালো হাইসাওয়া

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের বর্ষপূর্তি উদযাপন

নিউজ রুম / ৩৭ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন

আলমগীর এস :
৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০০৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পথচলা শুরু করা
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে (কমেক) এখন ১৫ বছরে পা দিয়েছে। প্রথম ব্যাচে কমেক ১৪টি বছর অতিক্রমকালে ১৪ ব্যাচ শিক্ষার্থী ধারণ করেছে। এদের মাঝে ইতোমধ্যে ৮ ব্যাচের ৪৩৯ জন পূর্ণ ডাক্তার হয়ে চিকিৎসা সেবায় ছড়িয়ে পড়েছে দেশের নানা প্রান্তে। ইন্টার্ণি করছেন আরো ৫০ জন।
প্রতিবছর ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা বাড়লেও গত ১৪ বছরেও পূর্নতা পায়নি কমেক। নিরিবিলি পরিবেশে ক্যাম্পাস চালু হলেও এখনো রয়েছে শিক্ষক ও কর্মচারীশূন্যতা। কলেজ ভবন, হোষ্টেলও অপূর্ণ। ছয়তলা ভবনের হোস্টেল হবার কথা থাকলেও তৃতীয় তলায় থমকে আছে নির্মাণ। ফলে বছর বছর শিক্ষার্থী বাড়লেও আবাসন সংকট তীব্র হচ্ছে। গাদাগাদি অবস্থান, ফ্লোর ও বেলকনিতে বিছানা পেতেও হোস্টেলে শিক্ষার্থী অবস্থান নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের জন্য হয়ে উঠেছে কষ্টসাধ্য।
এত সংকটের মাঝেও সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী একীভূত হয়ে উদযাপন করেছে কমেকের পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
‘স্মৃতি-প্রীতির বন্ধনে; এক হবো এ প্রাঙ্গণে’- স্লোগানে প্রথম থেকে ১৪তম ব্যাচ মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অংশ নেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালী শেষে প্রতিষ্ঠার ১৫তম বছরে এসে উদ্বোধন করা হয়েছে এনাটমি মিউজিয়াম (শারিরিক বিদ্যা জাদুঘর)। চিকিৎসা বিদ্যায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রধান শিক্ষা উপকরণ এনাটমি। প্রতিটি মেডিকেল কলেজ যাত্রাকালেই এ মিউজিয়াম স্থাপণ করে। কিন্তু কমেকে তা হয়ে উঠেনি।
সূত্র মতে, ২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের একটি ইউনিটে কমেকের যাত্রা। সেখান হতে ২০১৫ সালে চড়াই-উতরাই পার হয়ে কলেজটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে এনাটমির প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ ক্রয়ের ব্যবস্থা করলেও সাজানোর সুযোগ পাননি ততকালীন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রেজাউল করিম। প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয়কে অতিরিক্ত হিসেবে উল্লেখ করে তাঁর অবসরের পর দুদক মামলা করলে পরবর্তী কোন অধ্যক্ষ-ই এনাটমি মিউজিয়াম বা অন্যকোন উন্নয়ন কর্মকান্ড গড়তে উদ্যোগী হননি। শ্রেণি কক্ষে থাকা সরঞ্জামেই শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে দায় সারানো হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন ‘কক্স এমসি’র ১৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনাটমি মিউজিয়ামটি উদ্বোধন করেছেন।

এ মিউজিয়ামে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের উপকরণ সংরক্ষণ করা হয়েছে। কঙ্কাল, হার্টসহ মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে মিউজিয়াম। ক্লাসে উপস্থাপিত আলোচনার সাথে পরবর্তী সময়ে মিলিয়ে দেখতে শিক্ষার্থীরা চাইলেই মিউজিয়ামে যখন তখন ঢুকে দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কমেকের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল আলম ও সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেনের ব্যবস্থাপনায় উদযাপন হওয়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনাটমি মিউজিয়াম উদ্বোধন কালে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অশোক কুমার দত্ত, সুভাষ চন্দ্র সাহা, অনুপম বড়ুয়া ও অরূপ দত্ত বাপ্পীসহ সাবেক-বর্তমান শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এরপর হলরুমে চলে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ সভা। এতে প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ প্রয়াত ডা. বিএম আলী ইউসুফের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা ও সম্মাননা জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা হতে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ ক্যাম্পাসে আসা শুরু করেন। স্ব স্ব কর্মক্ষেত্র হতে দীর্ঘদিন পর পুরোনো সহপাঠী ও সঙ্গীদের কাছে পেয়ে আপ্লূত হন সবাই। সারাদিন ব্যাপী চলা মিলন মেলায় সন্ধ্যার পর হতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে।
কমেক অধ্যক্ষ ডা. ফরহাদ হোসেন বলেন,
অপর্যাপ্ত প্রশাসনিক ভবন এবং হোস্টেল থাকলেও হাতে-কলমে ডাক্তার হয়ে উঠার মূল মাধ্যম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৭ সালে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ৬ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত একটি ইটও ওঠেনি। ফলে নানামুখি সংকট নিয়ে খুঁড়িয়ে-ই চলছে কমেকের কার্যক্রম। এরই মাঝে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বর্তমান শিক্ষার্থী মিলিয়ে পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় ২০১০ সালের নভেম্বরে ২৫০ শয্যার কক্সবাজার সদর হাসপাতাল অস্থায়ী কমেক হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সেই থেকেই এটিই ইন্টার্ণ চিকিৎসক ও কলেজের ৩য় থেকে ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থীর ক্লিনিক্যাল প্রশিক্ষণ গ্রহন ক্ষেত্র হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। অথচ সেখানে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। আমরা আশাবাদী আগামী অর্থবছরে কমেকের স্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এটা নিশ্চিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন অধ্যক্ষ।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর