শিরোনাম :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি বাড়ি পুড়ে ছাই,ক্ষয়ক্ষতি ৪০ লাখ টাকা সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ডাকাতের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ জেলে ফেরত এনেছে বিজিবি “১ টাকায় হাজার টাকার বাজার” নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবি শিশু সহ ২ জন নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার-৮ কক্সবাজারে নাতনির স্বামীর হাতে নানী খুন বিকাশের দোকান চুরিতে ২লাখ ৭০হাজার টাকা উধাওঃব্যথার ওপর সংবাদকর্মী ব্যথা নৌবাহিনীর অভিযান : মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুরি হওয়া কোটি টাকার মালামাল জব্দ মালয়েশিয়া বলে ইনানী সৈকতে শতাধিক রোহিঙ্গাকে রেখে পালালো দালালরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কক্সবাজারের অনেক এলাকায় খাবার পানির সংকট :ইয়াছমিন-রহিমার পানির দুঃখ ঘুচালো হাইসাওয়া

উখিয়ায় ডাম্পার ট্রাক চাপায় বন কর্মকর্তা হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

নিউজ রুম / ২৫ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের উখিয়ায় সংরক্ষিত বনে ডাম্পার  ট্রাকের চাপায় বনবিট কর্মকর্তা হত্যাকারিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বন কর্মকর্তা, কর্মচারি সহ পরিবেশ ও বন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবীরা।

মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার শহীদ সরণীস্থ বনবিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এমন দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে কক্সবাজারে চলাচলকারি অবৈধ ড্রাম্প ট্রাক বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়।

প্রায় ৫ শতাধিক বন কর্মীর উপস্থিতিতে আয়োজিত মানববন্ধনের শুরুতে নিহতের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ চক্র বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে। এই সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযানে ক্ষুব্দ হয়ে পরিকল্পিতভাবে বিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে, বন কর্মকর্তা, সামাজিক, সাংবাদিক, পরিবেশবাদীরা, পাহাড় কাটা বন্ধ, পরিবেশ প্রকৃতির রক্ষা, অবৈধ ডাম্পার বন্ধ করে বোন কর্মকর্তা হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, আমরা এ ধরনের অহরহর ঘটনার স্বীকার হচ্ছি। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগে এ পর্যন্ত ১০৮ টি মামলা হয়েছে। ২০০৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, অবৈধ ডাম্পার গুলোকে যেকোনোভাবে দমন করতে হবে। আমার সহকর্মীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই ডাম্পার।

আমরা মেসেজ দিতে চাই। যারা পাহাড় কাটা চক্রের সাথে জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতার মধ্যে আমরা নিয়ে আসব।প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষকে নিয়ে যারা মাটি কাটছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নেব।

হিমছড়ি সিএমসির সভাপতি আব্দুল মাবুদ বলেন, উখিয়াতে প্রায় তিন শতাধিক ডাম্পার রয়েছে। এসব ডাম্পার গুলোর মালিকারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে পাহাড়ের মাটি কাটছে। ধ্বংস করছে আমাদের পরিবেশ। তাই এদের বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।

কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম বলেন, সবগুলো ডাম্পার অবৈধভাবে চলাচল করছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আর কোন মায়ের বুক যাতে খালি না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ডাম্পারের কারণে আমরা অতিষ্ঠ, বন কর্মকর্তার মামলাটি যেন দ্রুত গতিতে চলে ।

মামলার বাদী উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বলেন, মামলা করার সাথে সাথে পুলিশ পাঁচ নম্বর আসামীকে গ্রেফতার করেছে। আমার জানামতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। পুলিশকে আমরা খুব আন্তরিকভাবে কাজ করতে দেখেছি।

আমরা চাই এক নম্বর আসামি সহ বাকি আসামি যারা আমার বিট অফিসার কে ট্রাক চাপা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

পাহাড় কর্তনের কাজে এভাবে যাতে আর কোন ডাম্পার ঢুকতে না পারে। কোন ডাম্পার যাতে অবৈধভাবে চলাফেরা করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এতে  কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলম, উত্তর বনবিভাগীয় কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু ,উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ও মামলার  বাদী মোঃ কাজী শফিউল আলম, হিমছড়ি সিএমসির সভাপতি আব্দুল মাবুদ, ইনানী সিএমসির সভাপতি শহীদুল্লাহ কায়সার, উখিয়া অঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমান, রেস্টার মোঃ কামরুজ্জামান সুভন, নেকমের আঞ্চলিক পরিচালক ডঃ মোঃ শফিকুর রহমানসহ  অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

রবিবার (৩১ মার্চ) ভোরে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল বনদস্যু। খবরে পেয়ে বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) সহ কয়েকজন বনকর্মি ঘটনাস্থলে যান। এসময় তিনিসহ মোটর সাইকেল আরোহী দুইজনকে পাচারকারিদের মাটিভর্তি ডাম্পট্রাক চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে সাজ্জাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে মারা যান এবং মোহাম্মদ আলী নামের এক বনরক্ষী আহত হন।

নিহত মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।

ঘটনায় আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে।

এ ঘটনায় উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করেছেন।

মামলার আসামিরা হল, উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্পার ট্রাকটির চালক মো. বাপ্পী (২৩), একই এলাকার সুলতান আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ (৪০) ও তার ছেলে মো. তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম (৩৫), হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো. রুবেল (২৪) এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)।

ইতিমধ্যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে, এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫)। জব্দ করা হয়েছে ড্রাম্প ট্রাকটিও।

উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন বলেন, মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ আনতরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর